preloader_image

About diabetes

Esteem Soft || 19-Jun-2023 || 369 Last Updated: 22-06-2023 06:19 AM

ডায়াবেটিস কি?

শরীরে ইনসুলিন কম বা অকার্যকর হওয়ার জন্য কোষে গঢুকোজের ঘাটতি এবং রক্তে গণ্ডুকোজের বাড়তি হওয়ার সামগ্রিক অবস্থাই ডায়াবেটিস মেলাইটাস। ইনসুলিন এক ধরনের হরমোন যাহা অগ্নাশয় নামক গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়। ইনসুলিন গণ্ডুকোজকে রক্ত হতে কোষের মধ্যে প্রবেশ করায় এবং কোষ সমূহ গণ্ডুকোজ থেকে শক্তি উৎপাদন করে। ইনসুলিনের অভাব হলে বা অকার্যকর হলে কোষ গঢুকোজকে গ্রহন করতে পারেনা। ফলে রক্তে গঢুকোজের পরিমান বেড়ে যায়।

ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ :

* ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

* খুব বেশি পিপাসা লাগা

* বেশি ক্ষুধা লাগা

* ওজন কমে যাওয়া

* ক্লান্ডিও দূর্বলতা বোধ করা

* ঘা শুকাতে দেরি হওয়া

* চোখে কম দেখা

* খোশ-পাঁচড়া, ফোড়া প্রভৃতি চর্ম রোগ দেখা দেওয়া

* বারে বারে প্রসব সমস্যা বা বাচ্চা নষ্ট হওয়া ।

শতকরা ৫০% বয়স্ক রোগীদের এ সব লক্ষণ দেখা নাও যেতে পারে। রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে ।

কাদের ডায়াবেটিস হতে পারে :

যে কারো যে কোন বয়স যে কোন সময়ে ডায়াবেটিস হতে পারে। তবে নিতে উলেণ্ঢখিত শ্রেণীর লোকের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি -

* যাদের বংশে ডায়বেটিস আছে

* যাদের ওজন অনেক বেশি বা মেদ ভুরি বেশি

* যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করেনা

* যারা বহুদিন স্টেরোয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করে।

ডায়াবেটিস কি সারানো যায় ?

ডায়াবেটিস রোগ সারেনা। ইহা সারা জীবনের রোগ। তবে এ রোগকে নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রনে রাখা যায় এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায়।

ডায়াবেটিস নির্ণয় :

কারো রক্তে গঢ়ুকোজ সুনির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে তাকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মাত্রাগুলো। FBS (Fasting blood suger বা অভুক্ত অবস্থায় রক্তে গণ্ডুকোজ) 7.0 mmol / Liter. বা তার বেশি। 2 hours after 75 gm glucose drink (অভুক্ত ব্যাক্তিকে ৭৫ গ্রাম গণ্ডুকোজের শরবত খাওয়ানোর ২ ঘন্টা পর) 11.1 mmol / Liter, বা তার বেশি।

ডায়াবেটিস এর প্রকারভেদ :

* Type-1 : Insulin dependent Diabetes Mellitus. (ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিস মেলাইটাস)

* Type 2- Non insulin dependent Diabetes Mellitus. ( ইনসুলিন অনির্ভর ডায়াবেটিস মেলাইটাস )

* Gestational Diabetes Mellitus. (গর্ভকালীণ ডায়াবেটিস মেলাইটাস)

* বিবিধ কারণ ভিত্তিক ।

Type-1 : ডায়াবেটিস মেলাইটাস : এ ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরী হয়না । সাধারনত ৩০ বছরের কম বয়সে এ ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। বেঁচে থাকার জন্য এ সকল রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতেই হয়। অন্যথায় রক্তে গণ্ডুকোজ অতি দ্র“ত বৃদ্ধি পেয়ে অজ্ঞান হয়ে রোগী মৃত্যু মুখে পতিত হয়।

Type - 2 : ডায়াবেটিস মেলাইটাস : এ ধরনের রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৩০ বছরের উপরে তবে আজকাল ৩০ বছরের নিচেও দেখা যায়। এদের শরীরে ইনসুলিন তৈরী হয় তবে প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় অথবা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কম থাকে। এই ধরনের রোগীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোটা ও মেদ-ভুরিওয়ালা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস পাওয়া যায়।

গর্ভকালীণ ডায়াবেটিস :

অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পরে, প্রসবের পরে ডায়াবেটিস থাকেনা- এ প্রকার জটিলতাকে গর্ভকালীণ ডায়াবেটিস বলে। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস হলে মা,গর্ভের বাচ্চা ও নবজাতক সকলের জন্যই বিপদ জনক হতে পারে। বিপদ এড়াবার জন্য গর্ভকালীণ অবস্থায় ইনসুলিনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা আবশ্যক। এদের প্রসব হাসপাতালে করানো উচিৎ। সুতারাং প্রত্যেকের গর্ভকালীণ চেক-আপে রক্তে গণ্ডুকোজের মাত্রা দেখা উচিৎ। এসব প্রসুতির পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ডায়াবেটিক মহিলা গর্ভধারণ করতে চাইলে :

ডায়াবেটিক মহিলা গর্ভবতী হওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ৩-৫ মাস আগে থেকেই খাওয়ার ঔষধ বাদ দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন নিতে হবে। HbA1c ৬.৫% এর কাছাকাছি হলে চিকিৎসকের অনুমতি সাপেক্ষে গর্ভধারণ করতে পারেন। গর্ভকালীণ অবস্থায় রক্তে গণ্ডুকোজ মাত্রা অভুক্ত অবস্থায় ৫.০ mmol/L এবং খাবারের পরে ৭.০ mmol/L এর নিচে রাখতে হবে। অন্যথায় শিশু বিকলাঙ্গ ও অন্যান্য শাররীক সমস্যা হতে পারে।

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের বিপদ :

* ব্রেইন স্ট্রোক ও প্যারালাইসিস

* হৃদরোগ তথা হার্ট এ্যাটাক

* পায়ে পচন

* চক্ষুরোগ এমনকি অন্ধত্ব

* কিডনী নষ্ট হওয়া

* সংক্রামক রোগ যেমন- যক্ষা, পাতলা পায়খানা, ফোঁড়া, দাঁতের মাড়ির ইনফেকশন ইত্যাদি

* যৌন ক্ষমতা কমে যাওয়া

* মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ওজনের শিশু জন্ম, মৃত শিশুর জন্ম, অকালে সান প্রসব, জন্মের পরেই শিশুর মৃত্যু ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস রোগীর জরুরি অবস্থা :

১। হাইপোগণ্ডাইসেমিয়া বা রক্তে গঢ়ুকোজের স্বল্পতা।

২। ডায়াবেটিক কোমা

 

হাইপোগণ্ডাইসেমিয়া

 

প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঔষধ বা ইনসুলিন নেওয়ার ফলে যদি রক্তে গণ্ডুকোজের পরিমান খুব কমে যায় অর্থাৎ 2.5 mmol/L এর কম হয়।

লক্ষন :

* অসুস্থ বোধ করা

* খুব বেশি খিদে পাওয়া

* বুক ধড়ফড় করা

* বেশি ঘেমে যাওয়া

* শরীর কাঁপতে থাকা

* অস্বাভাবিক আচরণ করা

* শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা

* অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

* খিঁচুনি হওয়া।

কারণ :

* ঔষধের (ট্যাবলেট বা ইনসুলিন) পরিমান প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হলে

* প্রয়োজনের চেয়ে খাবার খুব কম হলে বা খেতে ভুলে গেলে

* ইনসুলিন নেওয়ার পর খুব দেরি করে খাবার খেলে

* হঠাৎ বেশি ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করলে ।

করণীয় :

এসব লক্ষন দেখা দেওয়া মাত্রই ৪-৮ চামচ পঙ্গুকোজ বা চিনি দিয়ে এক গণ্টাস শরবত বানিয়ে খেয়ে নিতে হবে কিংবা তাকে খাইয়ে দিতে হবে। রোগী অজ্ঞান হলে গঢুকোজ ইনজেকশন দিতে হবে এবং তাড়াতাড়ি নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।

 

ডায়াবেটিক কোমা

 

Type -1 রোগীদেরই সাধারনত ডায়াবেটিক কোমা হয়ে থাকে। অপর্যাপ্ত ইনসুলিন নিলে বা ইনসুলিন একেবারে না নিলে রক্তে গঢুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে এ জটিলতা দেখা দেয়। ইনসুলিনের অভাবে শরীর গঢুকোজের পরিবর্তে শক্তি তৈরীর জন্য অতিরিক্ত চর্বি ভাঙ্গে এবং শরীরে ক্ষতিকর কিটোন বডির পরিমাণ বেশি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। এই অবস্থাকে ডায়াবেটিক কোমা বলে।

লক্ষন :

* প্রস্রাবে গণ্ডুকোজ খুব বেশি বেড়ে যাওয়া

* খুব বেশি পিপাসা লাগা

* বেশি ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া

* অত্যন্ত্ বেশি খিদে লাগা

* বমি ভাব হওয়া

* ঝিমানো

* শ্বাসকষ্ট হওয়া

* দ্রত শ্বাস নেওয়া

* মাথা ধরা

* চোখে ঝাঁপসা দেখা

* নিজে বোধ হওয়া

* শ্বাসে এসিটনের গন্ধ (পাকা ফলের গন্ধ ) বের হওয়া।

করণীয় :

১) শরীরে পানি স্বল্পতা কমানোর জন্য লবন মিশ্রিত পানি খেতে পারেন ।

২) ইনসুলিনের পরিমান বাড়াতে হবে।

৩) অবিলম্বে চিকিৎসকের সহায়তা নিতে হবে।

 

ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা :

 

ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায়না তবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়।

ডায়াবেটিস চিকিৎসার মূল উপাদান :

১. শিক্ষা ও শৃংখলা

২. সঠিক খাদ্যাভ্যাস

৩. ঔষধ

শিক্ষা ও শৃংখলা :

ডায়াবেটিস নিরাময় যোগ্য নয় বরং নিয়ন্ত্রন যোগ্য বিধায় রোগী এবং রোগীর নিকট আত্মীয়কে ডায়াবেটিস সম্বন্ধে মৌলিক শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। সরবরাহকৃত বইটি কয়েকবার অধ্যায়ন করলে প্রয়োজনীয় শিক্ষা অর্জিত হবে।

শিক্ষার উদ্দেশ্য

ক) নিজের রোগ নিয়ন্ত্রনের দক্ষতা অর্জন

খ) ডায়াবেটিস এর কারণে পরিবর্তিত জীবন ধারা অর্জন

গ) জর—রী অবস্থা মোকাবেলার দক্ষতা অর্জন।

শৃংখলাই ডায়াবেটিস রোগীর মূল চিকিৎসা, জীবনের সকল ক্ষেত্রে শৃংখলা মেনে চলতে হবে। যে সমস্ত বিষয়ের উপর বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে -

১. নিয়মিত ও পরিমাণ মত সুষম খাবার খাওয়া

২. নিয়মিত ও পরিমাণ মত ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম করা

৩. চিকিৎসকের উপদেশ ও ব্যাবস্থাপত্র সঠিকভাবে মেনে চলা

৪. শরীর পরিচ্ছন্ন রাখা

৫. পায়ের বিশেষ যত্ন নেওয়া

৬. বিড়ি, সিগারেট, তামাক, জর্দা, এ্যালকোহল ও সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য সম্পূর্ণ পরিহার করা

৭. শারীরিক কোন অসুবিধা হলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া

৮. চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যাতীত ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা বন্ধ না করা।

ব্যায়াম :

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যায়াম অতি জরুরি। ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম মাংস পেশির জড়তা দূর করে ও রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। ব্যায়াম করলে ইনসুলিন নিঃসরণের পরিমাণ ও ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন ৪০ মিনিট হাঁটলে শরীর সুস্থ থাকবে, সেটা নিয়মিত একই সময়ে করলে ভাল হয় । প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে, একদিন হাঁটতে না পারলে পরের দিন অবশ্যই ৫০ মিনিট হাঁটতে হবে।

পায়ের যত্ন

পা গুরত্বপূর্ণ অঙ্গ। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তনালী ওায়ুর সমস্যা হওয়ার কারণে পায়ে সংক্রমন দেখা দিতে পারে। এমন কি পচনশীল ঘাঁ হতে পারে ফলশ্রুতিতে পা কেটে ফেলতে হয়। তাই পায়ের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।

পায়ের যত্নের তিনটি মূল নীতি :

১) পায়ে যেন কোন ধরণের আঘাত না লাগে

২) পা যেন সবসময় পরিষ্কার ও শুকনা থাকে

৩) পায়ে কোন সমস্যা হলে দেরি না করে অতি সত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পায়ের অসুবিধা এড়াতে করণীয় :

১) খালি পায়ে হাঁটবেন না। নরম ও আরামদায়ক জুতা পরে হাঁটবেন। মোজা না পরে কখনই খালি পায়ে জুতা পরবেন না

২)পায়ে বেশি গরম পানি ঢালবেন না

৩) নিয়মিত পায়ের বাড়তি নখ কাটবেন। বিশেষ সাবধানতার সাথে কাটবেন যাতে আঙ্গুলে আঘাত না লাগে

৪) পায়ের কড়া নিজে কাটবেন না

৫) ময়লা বা ভিজা মোজা পরবেন না

৬) প্রতিদিন ভালভাবে পা ধুয়ে শুকনা কাপর দিয়ে পা মুছে ফেলবেন যাতে পায়ের দুই আঙ্গুলের মাঝের যায়গাও ভিজা না থাকে

৭) রক্ত চলাচল ভাল রাখার জন্য নিয়মিত পায়ের ব্যায়াম করবেন

৮) পায়ের রঙের কোন পরিবর্তন হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

দাঁত ও মাড়ির যত্ন

* পান, সুপারি, জর্দ্দা ও বিড়ি-সিগারেট দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি করে। তাই এগুলো পরিহার করতে হবে।

* নিয়মিত সকালে নাস্তার পর ও রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। (ব্রাশ ও পেস্ট দিয়ে অথবা সুন্নত মোতাবেক মিছওয়াক দিয়ে)

* দাঁত ব্রাস বা মিছওয়াক করার পর অদ্ভূত এক মিনিট আঙ্গুলের সাহায্যে মাড়ি মালিশ করবেন এতে মাড়িতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে ও মাড়ি মজবুত হয়।

* দাঁতে কোন সমস্যা হলে তাড়াতাড়ি ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিবেন।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস :

ডায়াবেটিস রোগীকে খাদ্যের ব্যাপারে অবশ্যই নিয়ম মানতে হবে । নিয়ম মেনে চলার উদ্দেশ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা সাথে সাথে স্বাস্থ্যও ভাল রাখা।

খাদ্য গ্রহণের নীতি :

১. শরীরের ওজন বেশি থাকলে কমিয়ে কম থাকলে বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা। আর স্বাভাবিক থাকলে সেটা বজায় রাখা।

২. চিনি মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া।

৩. শতকরা বহুল খাবারগুলো (চাল, আটা দিয়ে তৈরী খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি) হিসাব করে খাওয়া।

৪. আঁশযুক্ত খাবার ( ডাল, শাক, সবজি, টক ফল ইত্যাদি ) বেশি খাওয়া।

৫. সম্পৃক্ত চর্বি (Saturated Fat ) যেমন- ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস ইত্যাদি কম খাওয়া; পরিবর্তে অসম্পৃক্ত চর্বি (Unsaturated Fat) যেমন – উদ্ভিদ তেল, অর্থাৎ সয়াবিন তেল, সরিষা তেল, সূর্যমুখি তেল ইত্যাদি এবং সব ধরণের মাছ খাওয়ার অভ্যাস করা।

৬. নির্দেশিত খাদ্য তালিকা শিখে নেওয়া ।

৭. বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার নির্দেশিত পরিমাণে খাওয়া।

৮. নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া।

৯. কোন বেলার খাবার বাদ না দেওয়া ।

১০. একদিন কম আরেকদিন বেশি এভাবে খাবার না খাওয়া।

ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্য ব্যাবস্থা

ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্য সম্পর্কে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। খাদ্যের নিয়ম না মানলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। তাই চিকিৎসক বা পুষ্টি বিশেষজ্ঞ থেকে খাদ্যের তালিকা ঠিক করে নেওয়া উচিৎ।

ঔষধ

ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।

 

খাদ্য

 
যা খাওয়া নিষেধ

(সহজ শর্করা ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাদ্য) চিনি, গুড় এবং চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরী মিষ্টি খাবার, সফট ড্রিংকস (পেপসি, - স্প্রাইট, ফান্টা, কোকাকোলা ) মধু, খেজুর তাল বা আখের রস, মিছরি।

যা ইচ্ছেমত খাওয়া যাবে

চা বা কফি (চিনি ছাড়া), মসলা (ধনে, জিরা, হলুদ, মরিচ, আদা, রসুন, পিয়াজ), শাক-সবজি (ক তালিকায় উলেণ্ঢখিত), ফল (ক তালিকায় উলেণ্ঢখিত) মিষ্টি – এসপারটেম, স্যাকারিন, জেলাটিন ।

শাক ও সবজি
তালিকা-ক (যা খেতে বাধা নেই)

* সব রকম শাক যেমন - পালং শাক, লাল শাক, পুঁই শাক, কলমি শাক, ডাটা শাক, কচু শাক, পাট শাক ইত্যাদি ।

*ফুল কপি, বাধা কপি, মূলা, কাঁচা বা পাকা টমেটো, কাঁচা পেপে, শসা, খিড়া, করলা, ঝিংগা, চিচিংগা, পটল, ডাটা, সজনা, লাউ, চাল কুমড়া।

তালিকা-খ
(দিনে যে কোন একটি অথবা ভাত ও র“টির পরিবর্তে পরিমান বাড়ানো)

আলু ২২ গ্রাম ছোট একটা, মিষ্টি কুমড়া ৯০ গ্রাম, কচু ২২ গ্রাম, বরবটি ৬ টা, সিম ৬০ গ্রাম বা ৬ টা, কাঁচা কলা অর্ধেক, গাঁজর মাঝারি ১ টা, কাকরোল ছোট ১ টা, কাঁঠালের বিচি ৭/৮ টা, শালগম ছোট ১ টা, ঢেড়ষ মাঝারি ৮ টা, বেগুণ মাঝারি ১ টা ।

ফল
তালিকা- ক (যা খেতে বাধা নেই)

কালোজাম, লেবু, আমড়া, জাম্বুরা, কামরাঙা, বাঙ্গি, জামর“ল, আমলকি, তেঁতুল, চালতা, কচি ডাবের পানি । (স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য প্রতিদিনই কিছু টক জাতীয় ফল খাওয়া উচিৎ)।

তালিকা- খ (দিনে যে কোন একটি )

আম ৩০ গ্রাম ছোট আমের অর্ধেক, পাকা পেয়ারা ১ টা, লিচু ৬ টা, আতাফল অর্ধেক, কাঁঠাল মাঝারি ৩ কোয়া, কমলা মাঝারি ১টা, আপেল মাঝারি ১ টা, মাল্টা মাঝারি ১ টা, পাকা পেঁপে ৬০ গ্রাম, পাকা কলা অর্ধেক, তরমুজ ১৫০ গ্রাম, মিষ্টি বড়ই ৬ টা, বেদানা ৪০ গ্রাম, পাকা বেল ৩০ গ্রাম, খেজুর ৩ টা, আঙ্গুর ৬ টা, কেশর মাঝারি ১ টা, তালের রস ১/৩ কাপ।

ডায়াবেটিসের চিকিৎসার টার্গেট
পরীক্ষা টার্গেট
বি.এম.আই 25 Kg / m2 এর কম
বণ্ঢাড প্রেসার 130/80 mm Hg এর কম
FBS (অভুক্ত অবস্থায়) 4.4-6.1 mmol / L
নাস্তার ২ ঘন্টা পর 4.4-8.0 m mol/L
HbA1c 7.0% এর কম
কোলেস্টেরল (Cholesterol) 200mg / d1 এর কম
এল.ডি.এল (LDL) 100 mg / d1 এর কম
এইচ.ডি.এল (HDL) 40 mg / d1 এর কম
ট্রাইগিসারাইড (TG) 150mg / d1 এর কম
Popular Blog Posts
Latest Blog Posts